চোখের বালি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সেই কবেকার কথা। মাধ্যমিকে অধ্যয়নরত অবস্থায় চোখের বালি পড়িয়াছিলাম। কিশোরমনের আধখানি বুঝা আর আধখানি অবুঝার মধ্যবর্তীতে কী এক মুগ্ধতার আবেশ ছড়ায়িইয়া পড়িয়াছিল।
তারপর উচ্চমাধ্যমিকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে ঋতুপর্ণ ঘোষের চলচ্চিত্রায়ন দেখিয়াছিলাম। পূর্ণাঙ্গ তারুণ্যের আবহে আরো গভীর মুগ্ধতায় ডুবিয়াছিলাম অর্হনিশ।
আজি এতো এতো বছর পশ্চদে আসিয়া। এই ত্রিশোর্ধ বয়সে, পুনরায় যখনি চোখের বালি পাঠে অভিনিবেশ করিলাম। আশ্চর্য! পূর্বেকার মুগ্ধতার মালাখানি যেন বা মলয়হাওয়ার তোড়ে আলগা হইয়া গেল।
চরিত্রদের অতি সংবেদনশীল মন ও তরল আবেগের ঘন ঘন বহিঃপ্রকাশে আমার চিত্ত যেন ক্লান্তিতে ভরিয়া উঠিল। বিনোদিনীর বিবাহ ও বৈধ্যবের দৃশ্যপট যেন দীর্ঘ লম্ফে পাঠকের কল্পলোকে অতিক্রমণ করিয়া গেলো।
মাঝে মাঝে কাহিনীর কক্ষান্তর এতো আকস্মিকতার সহিত হইতে লাগিল; বিশেষ করিয়া বিবাহের পাত্র-পাত্রীর বিপ্রতীপকোণে পরিবর্তণ একদিকে যেমন রোমাঞ্চকর ঠেকিল, অন্যদিকে তেমন কৌতুকময় বোধ হইলো। সংলাপের ক্রমান্তর অধিক ঘনত্বে সংক্রমিত ঠেকিয়াছে।
তবে রবীন্দগদ্যের প্রবাহমানতায় বরাবরের মতোই মনোরম লাগিল।
📘চোখের বালি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১৯০৩।
Comments
Post a Comment