চাঁদের পাহাড় : বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ইউরোপীয় মহাযুদ্ধের ঠিক পাঁচ বছর আগে চাদেঁর পাহাড়ের গল্প শুরু। অপরাজিত, দৃষ্টি প্রদীপ, আরণ্যক ও চাদেঁর পাহাড়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রসঙ্গ প্রচ্ছন্ন ভাবে এনেছেন। রবীন্দ্রনাথও অল্প করেই এই বিষয়টাকে এনেছেন। অনেকদিন যাবত এই বিষয়কেন্দ্রিক ঐসময়ের প্রত্যক্ষদর্শী লেখকদের লেখা খুজচ্ছি। কিন্তু নজরুল ছাড়া কেউই বোধহয় লেখেননি।
কী? নিগার, কী বললি? ইষ্ট ইন্ডিজের তুলনায় তুই অত্যন্ত ফাজিল দেখছি। [৬]
শঙ্কর পোকার খেলতে না চাইলে আলবুর্কাকের এই উক্তি এখনকার জন্য এক ভয়ানক রেসিস্ট বলে বিবেচ্য হতে। বিভূতিমশাই এই বিষয়টাকে কেমন ঠিক বুঝতে পেরেছিলেন। ফিলিপ রথ তো এই এক বাক্যের উপর পুরো হিউম্যান স্ট্যাইন লিখে ফেলেছেন।
আগ্নেয়গিরি উপমহাদেশের কোন অনুষঙ্গ নয়। তাই বাঙলা সাহিত্যে এর কোন অংশগ্রহণ তেমন নেই। শঙ্করের মতো আমি "অগ্নিদেবের শয্যা" [৮] দর্শন করে বিস্ময়াভিভূত হলাম।
ইতালীয় অভিযাত্রীক আত্তিলিও গাত্তির কারাহারি পর্বতগুহায় বোতলবন্দী চিঠিখানি এতোটা হৃদয়র্স্পশী, কী বলবো! বিভূতিবাবুর কল্পনাশক্তির অসামান্য। এই যে ভারতীয়সভ্যতা আর্যাবর্ত থেকে আরম্ভ করে বিট্রিশ উপনিবেশ পর্যন্ত, কতো বহিজাতিভাষাসংস্কৃতির সংমিশ্রণ ঘটেছে। কিন্তু বাঙ্গালা সাহিত্য বিদেশীচরিত্ররা সামান্য উপলক্ষ হিসাবে এসেছে। পূর্ণাঙ্গ বিকশিত চরিত্র হিসাবে রবীন্দ্রনাথের গোরা এসেছে। তবে তা যতো না বিজাতীয় হিসাবে ততো বেশি দেশীর আবরণে অঙ্কিত হয়েছে। বিভূতিবাবুর পর্তুগিজ অভিযাত্রীক ডিয়াগো আলভারেজই বোধ হয় এমন পূর্নাঙ্গভাবে চিত্রিত হয়েছে।
আমার মেসোপটেমিয়া আখ্যানটির জন্য মরুভূমিতে যুদ্ধবন্দীদের পদযাত্রার যাতনা নিয়ে গবেষনায় শঙ্করের অভিজ্ঞতা পড়ে চমকিত হলাম।
চাঁদের পাহাড়
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
১৯৩৭।
Comments
Post a Comment