ইন্দিরা : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
ভাষা ও বিষয়বস্তুর বিবেচনাপূর্বক ইন্দিরা উপন্যাসিকাগ্রন্থখানি বহুলাংশে লঘুপ্রকৃতিবৎ বলিয়া অনুভূত হইলো।
যেইরূপে শবরীমঙ্গলে আসিয়া কমলকুমার তাহার ভাষারূপ তৎসমশব্দালী ছাকিয়া ফেলিয়াছেন, বর্ণনাভঙ্গিকে করিয়াছিলেন সহজতর; সেইরূপে ইন্দিরাতে বঙ্কিমচন্দ্র হইয়া উঠিয়াছেন জনগনসাধারণের পাঠের অধিক বোধগম্য।
কিন্তু তৎকালীন সংস্কৃতি ও সমাজবব্যবস্থায় ইন্দিরা ও সুভাষিণীর ক্রীড়ারচ্ছলে মুখচম্বণ ও তদপরবর্তী ইন্দিরার শোকেরসুখের স্মৃতিচারণ কি সমপ্রেম না হউক উভয়প্রেমককামনাকে কি ইঙ্গিত করে না? ঠিক প্রায়সমতুল্য একই প্রকার সমপ্রমের ইঙ্গিত দৃষ্টিগোচর হইয়াছিল কমলকুমারের গোলাপসুন্দরী উপন্যাসিকায়। আবার সামাজিক স্বীকৃতিকে আগ্রাহ্য করিয়া ইন্দিরা ও উপেন্দ্রর একত্রে একইগৃহে দম্পতিস্বরূপ বসবাস কি অধুনা লিভটুগেদার বলা যায়? (যেহেতু একপক্ষ তখনো অজ্ঞাত তাহারা বিবাহিত)। তদসময়ের পাঠককূল এই দ্বিবিষয়ে পাঠপূর্বক কিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করিয়াছে? সামাজিক অভিব্যাক্তি কিরূপ ছিলো নাকি এরূপ স্পর্শকাতর বিষয় সম্বন্ধে তাহারা সচেতন ছিল না।
📙ইন্দিরা (১৮৭৩)
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বঙ্গদর্শন, ১২৭৯ বাং
Comments
Post a Comment